নতুন চমক - কেদারনাথে সোনায় বাধানো গর্ভগৃহ -YouFestive

জয় বাবা কেদার :

গত দূর্গা পুজো, কালীপুজো এবং জগদ্ধাত্রী পুজো ২০২২ এ কিছু পুজো প্যান্ডেল এর থিম ছিল কেদারনাথ মন্দির। কয়েক দিনের উপচে পড়া ভিড় ও মানুষের উৎসাহ এই কেদারনাথ মন্দিরের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। তখন থেকেই কেদারনাথ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তালাশ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন সাইট ও ইউটুব ভিডিও দেখে বোঝার চেষ্টা করছি কেদারনাথ কিভাবে যাওয়া যায়।

কেদারনাথ মন্দির
কেদারনাথ মন্দির

কালিম্পঙ এর নিরালায় কাগে অন্য স্পট Offbeat Explorer Kaghey at Kalimpong

এই যুগে মহাপুরুষ মনীষীদের কিছু দরকারী বাণী এবং কেন প্রয়োজন |

মাধ্যমিক পরীক্ষা: জেনে নিন ২০১৫ সাল থেকে কারা প্রথম স্থান পেয়েছে

বাংলার উৎসব : কোচবিহারের রাস এক অভিনব উচ্ছাস

কতগুলি প্রশ্ন মনে জাগে।

কেদারনাথ কতদিন আগের তৈরি?

এতো বাধা সত্ত্বেও লাখ লাখ মানুষ কেন কেদারনাথ পৌঁছে যাচ্ছেন?

সাধারণ ভূমি থেকে আর কত বেশি উচুতে এই মন্দির অবস্থিত?

কেদারনাথ মন্দিরের ইতিহাস কি?

কলকাতা থেকে কেদারনাথ কি ভাবে যেতে হবে? খরচ কত হবে?


কেদারনাথে ভক্তরা কেনো ছুটে যায়?

ভগবান মহাদেবের অতি পবিত্র এই তীর্থভূমি ভারতের দ্বাদশ জ্যোতিরলিঙ্গ ও চার ধাম (পুরী, রামেশ্বরম, দ্বারাকা ও কেদারনাথ বদ্রীনাথ ) তীর্থভূমির মধ্যে অন্যতম।
এই মন্দিরের দ্বার বন্ধ করার সময় প্রদীপ জ্বালিয়ে যাওয়া হয় যা বহুদিন পর খোলার সময় সে প্রদীপ প্রজ্জলিত হতে দেখা যায়।


কেদারনাথ মন্দিরটি কেমন?

১২০০ বছরের ও আগে তৈরি হওয়া এই মন্দির সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১৭৫০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত যা পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ সান্দাকাফু (১১৯৩০) থেকে কিছুটা কম। 
মন্দিরের উচ্চতা ৮৫ ফুট।
মন্দিরটি ১৮৭ ফুট চওড়া।



ছয় ফুট উঁচু ভিতের উপর মন্দিরটি অবস্থিত রয়েছে।
কেদারনাথ এর ষাঁড়ের পিঠের কুঁজকেই জ্যোতিরলিঙ্গ হিসেবে পুজো করা হয় যা দেখতে ত্রিভুজের মত।
আদি শঙ্করা চার্য ১২০০ বছর আগে এই মন্দিরের সংস্কার করেছিলেন বলে জানা যায়। মহাভারতের সময় এই মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়।

কেদারনাথ কোথায় অবস্থিত ?

ভারতের উৎসবের রাজ্য উত্তরাখণ্ডের গারোয়াল শহরের কাছে হিমালয়ের কোলে এই কেদারনাথ তীর্থক্ষেত্র। 


এর পাস দিয়ে বয়ে চলেছে মন্দাকিনী নদী।


বরফের জন্য কেদারনাথ মন্দির বছরের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। এপ্রিল মাসের শেষের দিকে এই মন্দির খোলে এবং নভেম্বর মাসের মাঝের দিকে মন্দির বন্ধ হয়েছে যায়।


প্রতি বছর কেদারনাথ তীর্থক্ষেত্রে ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ তীর্থযাত্রী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেবাদিদেব শিব শঙ্কর কে দর্শন করতে যান।


প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বহুবার এই মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধসে ক্ষতি হয়েছে কিন্তু   অলৌকিক ভাবে এখানকার নন্দী মূর্তির গায়ে আচর লাগেনি।


ডোলিযাত্রা:

প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিবছর বেশিরভাগ সময় বিশেষত শীতকালে কেদারখন্ডে বরফে ঢাকা থাকে, তুষারপাত ঘটে। লোকালয় জনশুন্য হয়ে যায়। এই সময় পুরোহিতগন নিচে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু ভগবানের পুজো বন্ধ থাকে না। তাই ভগবান শিব এই সময় উখিমঠে পূজিত হন। কেদারনাথ থেকে উখিমঠ পর্যন্ত যাত্রা উৎসব রূপে পালন করা হয় যার নাম ডোলিযাত্রা। আবার শীতকাল কেটে গেলে ভগবান কেদারনাথে ফিরে আসেন।


কেদারনাথ মন্দিরের কিছু ইতিহাস:

রাহুল সংস্কৃত্যায়নের হিমালয় পরিচয় থেকে জানতে পারি এই মন্দির চারটি পর্যায়ে গড়ে ওঠে। গুপ্ত যুগের শিলালিপিতে এই মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া গেছে। তারপর এগারো শতকে গর্ভগৃহ সমেত গোটা মন্দিরের নির্মান হয়। পরবর্তীতে বারো শতকে মন্দির সংস্কার করা হয়। এবং ধীরে ধীরে আঠেরো শতকে মন্দিরের সামনের অংশ তৈরির মধ্য দিয়ে মন্দির নির্মান কার্য সম্পন্ন হয়।


পঞ্চকেদার সম্পর্কে একটি ইতিহাস কিংবদন্তি পাণ্ডবদের সাথে সম্পর্ক যুক্ত । পাণ্ডবরা কৌরবদের যুদ্ধে পরাজিত করার পর যুদ্ধের সময় তাদের আত্মীয় স্বজন এবং ব্রাহ্মন হত্যা করার জন্য যে পাপ করেছিলেন তার প্রায়শ্চিত্ত করতে চাইছিলেন। তারা তাদের রাজ্য আত্মীয়দের হাতে তুলে দিয়ে ভগবান শিবের খোঁজ করতে গেলেন। প্রথমে শিবের প্রিয় শহর হিসেবে পরিচিত পবিত্র নগরী কাশীতে যান তারা। যাইহোক, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অনেক মানুষের মৃত্যুর জন্য শিব গভীরভাবে শোকাহত ও বিরক্ত ছিলেন তাই পাণ্ডবদের প্রার্থনার প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নন্দীর রূপ ধারণ করেন এবং গাড়ওয়াল অঞ্চলে লুকিয়ে থাকেন। কাশীতে ভগবান শিবকে না পেয়ে পাণ্ডবরা গাড়ওয়াল হিমালয়ে চলে যান। ভীম গুপ্তকাশীর কাছে একটি ষাঁড়কে চরতে দেখেন। তিনি ষাঁড়টিকে লেজ এবং পিছনের পা দিয়ে ধরেছিলেন। ষাঁড়ের আকারে তৈরি ভগবান শিব ভূমিতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন এবং পরে কিছু অংশে আবার আবির্ভূত হন, কেদারনাথে কুঁজ গোলাপের সাথে, বাহুগুলি তুঙ্গনাথে, মুখ রুদ্রনাথে, নাভি ( নাভি) এবং পেট মধ্যমহেশ্বর এবং লোমগুলি কল্পেশ্বরে উপস্থিত হয়েছিল। পাণ্ডবরা এই স্থানে পাঁচটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।

এই বাংলায় দুর্গাপুরে রয়েছে উত্তরাখণ্ডের ছোটসংস্করণ কেদারনাথ মন্দির। দুর্গাপুর রেল স্টেশন থেকে ৩কিলোমিটার দূরে। দুর্গাপুর রেল স্টেশন থেকে নেমে ততো বা অটো ধরে ডি পি এস বয়েস স্কুলের পাশে মহাদেবের মন্দির বললে টোটো বাংলার কেদারনাথ নিয়ে যাবে।

একদিনের জন্য বাংলার কেদারনাথ ঘুরে আসতে পারেন বা রাত্রিবাস করতে পারেন, কাছে পিঠে হোটেল পাওয়া যাবে মাথা পিছু খরচ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।


কেদারনাথের গর্ভগৃহ সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়েছে।

ANI নিউজ কিছুদিন আগে একটি খবর ছিল কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহের দেওয়াল সোনার পাত দিয়ে অলঙ্কৃত করার কাজ শেষ হয়েছে। 


মোট ৫৫০টি সোনার পাত দেওয়ালে সেঁটে দেওয়ার কাজে নিযুক্ত ছিলেন ১৮জন দক্ষ শিল্পী। এতে মোট ২৩০ কেজিসোনা লেগেছে।


এই সোনা দান করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুম্বাইয়ের জনৈক ব্যাবসায়ী। IIT Roorkee, CSIR-CBRI ROORKEE, Archaeological Survey of India-র ৬জন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে এই কাজ হয়েছে।




কলকাতা থেকে কেদারনাথ ধাম কিভাবে যেতে হবে:

হাওড়া থেকে হরিদ্বার ট্রেন ধরে যেতে হবে -ট্রেন ভাড়া ৭০০ টাকা
হরিদ্বার থেকে শোনপ্রয়াগ বাস ধরে যেতে হবে ভাড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা
শোনপ্রয়াগে রেজিস্ট্রেশন করা হবে এবং সেখান থেকে লোকাল ট্রেকার ধরে যেতে হবে গৌরীকুন্ড ভাড়া ৫০ টাকা।
গৌরীকুন্ড থেকে কেদারনাথ মন্দির হাঁটাপথ, ট্রেকিং করে যেতে হবে ১৬ কিলোমিটার, বিশেষ ক্ষেত্রে ডুলি বা ঘোড়ার ব্যবস্থা আছে। তার জন্য খরচ হবে ৩০০০ টাকা। ফাটা থেকে হেলিকপ্টার এর ব্যবস্থা আছে খরচ ৭০০০ থেকে ১০০০০ টাকা।

উপসংহার :

শুধুমাত্র মনে ভক্তির জোরে এবং বাবা কেদারনাথ এর অসীম কৃপায় বহু মানুষ পৌঁছে যাচ্ছেন কেদারনাথ ধামে। এছাড়াও বাড়তি পাওনা প্রকৃতির ঢেলে দেয়া অপরূপ নিঃস্বর্গীক দৃশ্য। তাই বেশি চিন্তা না করে আজি পরিকল্পনা করুন আর পরিবার পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। জয় কেদার।

#Tag

Dehradun to Kedarnath in Bengali.

Kedarnath Garvagriha covered with gold.

Kolkata to Kedarnath Badrinath in Bengali.

Know about Kedarnat Temple in Bengali

Kedarnath temple PDF

Post a Comment

Previous Post Next Post