বর্ষার জঙ্গল বন্ধ! উপভোগ করুন ডুয়ার্সের ভিলেজ ট্যুরিজম।

ডুয়ার্স মানেই পাহাড়, নদী আর জঙ্গল। আর এই জঙ্গলকে কেন্দ্র করেই মূলত ডুয়ার্সের ট্যুরিজম। কিন্তু বর্ষায় গত ১৫ই জুন থেকে ১৬ই সেপ্টেম্বর তো পর্যটকদের জন্য  জঙ্গল বন্ধ। এখন উপায় কি? এই অবস্থায় কি জঙ্গলের স্বাদ নেয়া যাবে না? জঙ্গলের মধ্যে থাকা বুনোদের কি দেখা যাবে না? ব্যাপারটা কিন্তু একেবারেই এরকম নয়। 

Youfestive Dooars Destination
Dooars Beauty 


ভিলেজ ট্যুরিজম : 

যদিও বর্ষায় জঙ্গল বন্ধ থাকে তবুও আলিপুরদুয়ার জেলার বেশ কিছু গ্রামে বিশেষ করে পর্যটকদের জন্য ভিলেজ ট্যুরিজম তৈরি করা হয়েছে। বর্ষাকালে ডুয়ার্সের জঙ্গল বন্ধ থাকার কারণে পর্যটনে ভাঁটা পড়তে থাকে। আর এই সময়টাই কম পর্যটক থাকার কারণে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি ভালোভাবে করে নেয়া যায়। যেহেতু পর্যটনকে কেন্দ্র করেই ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের জীবিকা। সেকারণে এই সময় রোজগারে টান ধরে। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে ডুয়ার্সের একাধিক গ্রামে বর্ষাকালে শুরু হয়েছে ভিলেজ ট্যুরিজম।


পর্যটকদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা:


অবশ্যই! এই সময়ে মেন্দাবাড়ি একটি আকর্ষণীয় গ্রাম। এখানে জঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বন্য আদিমের সংস্পর্শ, এবং শান্তিতে সময় কাটার সুযোগ আছে। পর্যটকরা এখানে বর্ষা কালেও আসতে পারেন, কারণ পর্যটকদের জন্য খুব ভালো আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। অফিসের চাপে থাকা মানুষের জন্য মেন্দাবাড়ি একটি নতুন ডেস্টিনেশন হতে পারে, যেখানে শান্তি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মন ভরে যায়।



হোমস্টে:

মেন্দাবাড়ি এই গ্রামে মাত্র ২টি হোমস্টে রয়েছে। এছাড়া আরও কিছু হোটেল রয়েছে, অনলাইন বুক করা যেতে পারে, বর্ষায় আরও সবুজ হয়ে ওঠা ডুয়ার্সকে অসাধারণ লাগবে যদিও গ্রামবাসীদের দাবি জঙ্গলই ডুয়ার্সের সৌন্দর্যের শেষ কথা নয়, মেন্দাবাড়ি গ্রাম ছবির মতো সুন্দর। গ্রাম এতোটাই শান্ত যে দিনের বেলাতেও ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক শুনতে পাওয়া যায়।


সাফারির ব্যবস্থা :

১৫ই জুন থেকে ১৬ই সেপ্টেম্বর জঙ্গল বন্ধ থাকলেও বছরের অন্যান্য সময় জলদাপাড়া হাতি সাফারি অর্থাৎ সরকারি সংস্থা wbsfdc থেকে চিলাপাতা কার সাফারি, মাদারিহাট কার সাফারি, সালকুমার গেট কার সাফারি, NEC Watch tower বুক করতে পারবেন। জঙ্গলের গা লাগোয়া মেন্দাবাড়ি গ্রাম থেকে বর্ষায় সাফারি বন্ধ থাকলেও বন্য প্রাণীর দেখা মেলে। হরিণ, সম্বর থেকে শুরু করে ভাগ্য ভাল থাকলে হাতির দেখাও পেতে পারেন। বেশ একটা জঙ্গলের অবয়ব রয়েছে এখানে। মেন্দাগ্রামে বেড়াতে এলে পর্যটকদে রাভা উপজাতির বাসিন্দাদেরকে দেখতে পবেন। এই জনজাতির মানুষের জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।

সাফারি কিভাবে আগে থেকে বুক করবেন :

বর্ষা পার করে যদি কেউ মেন্দাবা়ড়ি আসতে চান তাহলে এখান থেকে ডুয়ার্সের একাধিক জঙ্গলে অনায়াসেই সাফারি করতে পারবেন। wbsfda সাইট থেকে অনলাইন সাফারি বুক করে নিতে পারেন, টাইম স্লট দের ঘন্টা করে, সকাল পাঁচটা থেকে বিকেল সারে তিনটে পর্যন্ত পাওয়া যায়। মেন্দাবাড়ির গ্রামের অবস্থান একেবারে মাঝে। চিলাপাতা, জলদাপাড়া, গরুমারা অভয়ারণ্য অনায়াসেই ঘুরে দেখতে পারবেন। আলিপুরদুয়ার থেকে মেন্দাবাড়ি গ্রামের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। আলিপুরদুয়ার স্টেশনে নেমে অটো করে পৌঁছে যাওয়া যায় এই মেন্দাবাড়িতে।


আলাদা মজা নিতে বর্ষা কে সাথী করুন আর বেরিয়ে পড়ুন

বাঙালি দূর্গা পূজার আগে বা পরে বেশিরভাগ সময় ঘুরতে পছন্দ করেন, কারন সারা বছরের কাজ, ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা সব বজায় রেখে নিশ্চিত মনে ঘোরার মজা আলাদা। কিন্তু সেই সময় প্রচুর পর্যটক আনাগোনা করাই স্বস্তি মত নিরিবিলি পরিসর পাবেন না তাই জঙ্গলের গা ঘেঁসে গাছবা়ড়িতে থাকার আলাদা মজা নিতে বর্ষা কে সাথী করুন আর বেরিয়ে পড়ুন। এই সময় রাভা উপজাতির মানুষের জীবনযাত্রা কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ তো পাবেনই। তার সঙ্গে সেখানকার মানুষের আতিথেয়তা মুগ্ধ করবে। যাঁরা এখনও ঘোরেননি বা ভাবছেন একটু নিরিবিলিতে প্রকৃতির মাঝে কটাদিন কাটিয়ে আসবেন তাঁরা ঘুরে আসুন এই অফবিট লোকেশনে।

Post a Comment

Previous Post Next Post