রাজধানী না বন্দে ভারত সুযোগ-সুবিধা দেখলে মাথা ঘুরে যাবে

 ভারতের চেন্নাই ইন্ট্রিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি তে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস প্রথম শুরু হয়েছে নতুন দিল্লী থেকে বারানসি পর্যন্ত ২০১৯ সালে।


ছবি সংগৃহীত 

এবার ভারতের স্লীপার কোচ শুরু হতে চলেছে। প্রিমিয়াম সিট থেকে কবচ সিস্টেম, ১৬০ কিমি বেগেও ঝাঁকুনি হবে না ট্রেনে! বন্দে ভারত স্লিপারে চড়লে ভুলে যেতে হবে রাজধানীকে।


অপেক্ষার শেষ সময় আগত । নভেম্বর ২০২৪ থেকেই ট্রাকে গড়াবে বন্দে ভারত স্লিপারের চাকা। আগেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এনেছে ভারতীয় রেল। যাত্রীরা উপভোগ করছেন সেমি-হাইস্পিড ট্রেনের অভিজ্ঞতা। এবার বন্দে ভারত স্লিপারের মাধ্যমে দ্রুতগতির সঙ্গে লাক্সারি বা প্রিমিয়াম সফরের অনুভূতিও পেতে চলেছেন রেলযাত্রীরা।


ভারতীয় রেলওয়ে এতদিন প্রিমিয়াম ট্রেন বলতে রাজধানী এক্সপ্রেসকেই ধরা হত। কিন্তু সেই ধারণা বদলাতে চলেছে বন্দে ভারত স্লিপার। বেশি দূরত্বে রাতে যাত্রার জন্যই স্লিপার ক্লাস যোগ করা হয়েছে বন্দে ভারতে। ১২০ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা এই ট্রেনে ১১টি 3AC, ৪টি 2AC এবং একটি ফার্স্ট ক্লাস কোচ থাকবে। মোট ৮২৩ জন যাত্রী সফর করতে পারবেন এই ট্রেনে। নভেম্বর মাসেই এই ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু হবে।



রাজধানীর সঙ্গে বন্দে ভারত স্লিপারের পার্থক্য-


ট্রেনের গতি - 

বন্দে ভারত স্লিপারে সর্বোচ্চ গতি হতে চলেছে ঘণ্টায় ১৬০ কিমি। সেখানেই রাজধানীর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিমি। রাজধানী এক্সপ্রেসের তুলনায় বন্দে ভারত স্লিপারে গতি তোলাও অনেক সহজ। এরফলে রাজধানীর থেকেও কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা।


যাত্রীদের আরাম ও সাচ্ছন্দ - 

বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনের সিটগুলি বানানো হয়েছে প্রিমিয়াম মানের, যা রাজধানী এক্সপ্রেসের সিটের তুলনায় ঢের ভাল। বন্দে ভারত স্লিপারে শুধু নীচে নয়, সিটের পাশেও থাকবে অতিরিক্ত কুশন ব্যবস্থা, যা যাত্রীদের আরামে ঘুমাতে সাহায্য করবে।


আপার বার্থ- 

অনেক যাত্রীদেরই ট্রেনের আপার বার্থ নিয়ে নানা অভিযোগ থাকে। ওঠার সমস্যা থাকে। বন্দে ভারত স্লিপারে এই বিষয়টিতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এখানে আলাদা সিড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা সহজেই উপরের বার্থে উঠতে পারেন।


অটোমেটিক ট্রেন- 

বন্দে ভারত স্লিপারের অন্যতম বিশেষত্ব হল এটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক ট্রেন। ট্রেনের দুই প্রান্তে থাকবে চালকের কেবিন। এই ট্রেন চালানোর জন্য আলাদাভাবে কোনও ইঞ্জিনের দরকার পড়বে না রাজধানী বা অন্যান্য ট্রেনের মতো।


অটোমেটিক দরজা ও টয়লেট- 

বন্দে ভারতের মতো বন্দে ভারত স্লিপারেও সমস্ত দরজা অটোমেটিক হতে চলেছে। যাত্রীদের নিজের হাতে দরজা খুলতে হবে না। বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনে থাকবে বায়ো-ভ্যাকুম টয়লেট সিস্টেম। টাচ ফ্রি মডুলার ফিটিংও থাকবে ট্রেনে। অর্থাৎ ফ্লাশ করার জন্য স্পর্শ করারও প্রয়োজন পড়বে না। এছাড়া ফার্স্ট ক্লাস এসি কোচে আলাদাভাবে শাওয়ার কিউবিকলের ব্যবস্থাও থাকবে, যেখানে যাত্রীরা স্নান করতে পারবেন।


ঝাঁকুনি বিহীন সফর- 

বন্দে ভারত স্লিপারের আরেকটি বিশেষত্ব হল এই ট্রেন যত দ্রুতগতিতেই চলুক না কেন, ভিতরে বসে যাত্রীরা কোনও ঝাঁকুনি অনুভব করবেন না।


এছাড়াও বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনে থাকবে কবচ সিস্টেম, যা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করবে। বিপদের সময় ট্রেনের চালকের সঙ্গে যাত্রীদের কথা বলার জন্য ইমার্জেন্সি টক ব্যাক ইউনিট থাকবে।


যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত মালপত্র রাখার জায়গা, চার্জিং সকেট, নজরদারির জন্য ভিজিলেন্স কন্ট্রোল ডিভাইস ও ইভেন্ট রেকর্ডারও থাকবে। ওভারহেড তারে কোনও সমস্যা হলে ৩ ঘণ্টার পাওয়ার ব্যাকআপের সুবিধাও থাকবে নতুন বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনে।

Post a Comment

Previous Post Next Post