উৎসব মুখর এই বাংলায় সারা বছর বিভিন্ন পূজা, আচার, অনুষ্ঠান ও উৎসব লেগেই থাকে। যা নিয়ে বাঙালী বছরভর আনন্দ উৎসবে মেতে থাকে। দূর্গা পূজা, কালী পূজা, দীপাবলি সবে শেষ হতে না হতেই বাঙালির দুয়ারে হাজির জগদ্ধাত্রী পূজা। বিশেষত সারা বাংলায় এই পূজার চল কিছুটা কম হলেও কৃষ্ণ নগর ও চন্দননগর জগদ্ধাত্রী পূজোর ধুম প্রতি বছর নজর কারে।
Jagadhatri puja English article
দূর্গা পূজা ও কালী পূজার মত লক্ষ লক্ষ টাকার মণ্ডপ, আলোকসজ্জা ও থিম পূজোর হুল্লোড় কৃষ্ণ নগর ও চন্দননগর এর পুজোয় চোখে পড়ার মত।
এবারে ২০২৪ কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজোর বিভিন্ন থিম পুজো :
রাধানগর অন্নপূর্ণা বারোয়ারি : এবারের থিম উজ্জ্বয়িনীর মহাকাল রূপ
ঘূর্ণি ভাই ভাই ক্লাব : এবারের নিবেদন ১০০ ফুটের চামুন্ডেশ্বরী মন্দির, ময়ীসুর, কর্ণাটক।
ঘূর্ণি স্মৃতি সংঘ : এবারের থিম গুজরাট বৈষ্ণব দেবী মন্দির।
পল্লীশ্রী বারোয়ারি : এবারের থিম " সৃষ্টি সুখের উল্লাসে"।
রাধানগর আদি বারোয়ারি : এবারের থিম অযোধ্যা রাম মন্দির।
রাধানগর নতুন বারোয়ারি : এবারের থিম কলকাতার বাওয়ালি রাজবাড়ী।
ক্লাব প্রতিভা : থিম " বিশ্বের সব থেকে বড় জগদ্ধাত্রী প্রতিমা"।
কলেজ স্ট্রিট বারোয়ারি : মুক্তি স্রোত।
পাত্রবাজার স্বীকৃতি ক্লাব : এবারের থিম জঙ্গি বারের ডোমিনোস টাওয়ার, আফ্রিকার ২য় উচ্চতম টাওয়ার।
কৃষ্ণ নগর মাদল : এবারের থিম "সব চরিত্র কাল্পনিক "।
নেদের পাড়া বারোয়ারি : এবারের থিম " সপ্নের দেশে"।
নাজিরাপাড়া বারোয়ারি : এবারের থিম "চাইনা হতে উমা "
কালীনগর গভঃ কলোনী বারোয়ারি : এবারের থিম "জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ও স্বর্ণমহল "।
উকিলপাড়া বারোয়ারি : এবারের থিম "বাঁশ কাঠের তৈরি ঝুড়ি দিয়ে তৈরি মণ্ডপ"।
বনশ্রী পাড়া বারোয়ারি : দেবী সর্ব শক্তি এক রূপ
বৌবাজার বারোয়ারি : এবারের থিম "সমারোহে এসো হে পরমতোরো।
আমীনবাজার বারোয়ারি : এবারের থিম রোমের ভাটিকান সিটি।
মল্লিক পাড়া বারোয়ারি : পিঞ্জরে প্রাণ মুক্তির গান।
বি বি এস বারোয়ারি : এ বছরের ২০২৪ থিম "নাট্য সংসদ"।
২০২৪ জগদ্ধাত্রী পূজার দিনক্ষণ :
এ বছর ৭ নভেম্বর থেকে শুরু পুজো শুরু (Jagadhatri Puja 2024)। সেদিন ষষ্ঠী। দশমী ১১ নভেম্বর। জগদ্ধাত্রী পুজো চারদিনে হবে। শুক্রবার ৮ নভেম্বর সপ্তমী। অষ্টমী শনিবার ৯ তারিখ। ১০ তারিখ মহানবমী। মূলত এই দিনই সাড়ম্বরে মায়ের পুজো হয়।
জগদ্ধাত্রী পুজো কবে থেকে শুরু হয়?
আনুমানিক চতুর্দশ শতাব্দীতে এক বিখ্যাত প্রাচীন গ্রন্থকার শূলপাণি জগদ্ধাত্রী মায়ের রূপ ও পূজার বর্ণনা করেন। কিন্তু তখন এই পূজোর প্রচলন শুরু হয়নি।
খ্রীষ্টায় অষ্টদশ শতাব্দীতে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র বাংলার নবাব আলী বর্দি খাঁ কর্তৃক কারাগারে নিক্ষেপিত হন। যখন তিঁনি মুক্তি পান তখন মুর্শিদাবাদ থেকে নদীয়া যাত্রাপথে ঢাকের বাদ্য এর আওয়াজ আসছিলো। তিঁনিই খোঁজ নিয়ে জানলেন সেদিন বিজয়া দশমী। রাজার মন খুব খারাপ ছিল কারন দূর্গা পূজার সময় তিঁনি কোনো সারম্বর অনুষ্ঠান করতে পারেননি সে বছর। দুঃখে কাতর হয়ে রাজা ঘুমিয়ে পড়লেন ও দেবী ভগবতীর সপ্নাদেশ পেলেন যে - ঠিক এক মাস পর কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষে নবমী থিতিতে তাঁর পূজা করার জন্য। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর সপ্নে দেখা মা জগদ্ধাত্রী দেবীর প্রতিমা শিল্পীকে গড়তে দিলেন এবং খুব ধুমধাম করে পুজো করলেন নবমীতে।
মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর বন্ধু ইন্দ্রনারায়ণ চোধুরী কে জগদ্ধাত্রী পুজো করার জন্য অনুপ্রাণিত করেন এবং পরবর্তী সময়ে ইন্দ্রনারায়ণ চোধুরী চন্দননগর তাঁর আপন বাসভূমিতে জগদ্ধাত্রী পূজা আরম্ভ করেন।